লোককবি আবদুুল হাই মাশরেকীর ৯৭তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত দুদিনব্যাপী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, আবদুল হাই মাশরেকী ছিলেন মূলসংস্কৃতির শিকড়ের আধুনিক কবি। গ্রামের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের জীবনের রূপকার।
গত ২০ এপ্রিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- গীতিকবি ফেরদৌস হোসেন ভূঁইয়া, লোকসঙ্গীত গবেষক রফিকুল হক ঝন্টু, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্মসম্পাদক আশরাফ আলী, সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ সেলিম রেজা, অধ্যক্ষ আবু সাঈদ, আবৃত্তিশিল্পী মীর বরকত, কবি মাশরেকী গবেষণা কেন্দ্রের সহ-সভাপতি নাসির উল্লাহ্ ভূঁইয়া ও কবিপুত্র মো. নঈম মাশরেকী। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন অভিনেতা ও নির্মাতা শংকর সাওজাল।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, কবির অমর বাণী ‘এবার জাগাও মোরে’ স্মারক করে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন বলেন, কবি আবদুল হাই মাশরেকী এদেশের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের জীবনের রূপকার। তাঁর গান মানুষের মনের ভেতরে নাড়া দিতে পেরেছিল বলেই তাঁকে নিয়ে আজ স্মরণ সভা হচ্ছে। কবি মাশরেকীর গান হৃদয়স্পর্শী। তাই তৃণমূল মানুষের কাছে যেতে পেরেছিলেন তিনি। আজকের প্রজন্মের জন্য কবি মাশরেকীদের নিয়ে আরো গতিশীল কাজ করা প্রয়োজন দেশ ও জাতির স্বার্থে।
গীতিকবি ফেরদৌস হোসেন ভূঁইয়া বলেন, কবি আবদুল হাই মাশরেকীর কবিতা-গান গণমুখী ও মেলোডি। তাঁকে লোককবি শব্দে সীমাবদ্ধ করা যাবে না। তিনি মূলসংস্কৃতির শিকড়ের আধুনিক কবি।
লোকসঙ্গীত গবেষক রফিকুল হক ঝন্টু বলেন, আবদুল হাই মাশরেকীর গানের সঙ্গে আমার পরিচয় ছোটবেলা থেকেই। কবি মাশরেকীর গানের ভান্ডারের তথ্য আমাকে দিয়েছিলেন আমার স্যার সঙ্গীত শিল্পী হাফিজুর রহমান। লোকসঙ্গীত সংগ্রহ ও গবেষণা করতে গিয়ে কয়েকহাজার গানের মধ্যে পাঁচশ’র উপরে আমি কবি মাশরেকীর গান সংগ্রহ করেছি। যা আমাদের জাতীয় সম্পদ। তা সংরক্ষণ করা সরকারের দায়িত্ব বর্তায়। আমাকে সহযোগিতা করলে এই কবির আরো গান খুঁজতে সক্ষম হব। আবদুল হাই মাশরেকী পল্লীগীতি শিরোনামে আগামীতে বই আকারে বের করে আপনাদের হাতে তুলে দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্মসম্পাদক আশরাফ আলী বলেন, কবি আবদুল হাই মাশরেকী যেখানে জন্মগ্রহণ করেছেন, সে অঞ্চলের আমি একজন হয়ে আজ গর্ববোধ করি। তাঁর সাহিত্যকর্ম প্রকাশে আমিও কাজ করবো। জাতীয় প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে কবির প্রতি জানাই শ্রদ্ধা।
সঙ্গীত বিশেষজ্ঞ সেলিম রেজা বলেন, আমার মুক্তিযুদ্ধের ওপর গানের বইয়ে কবি আবদুল হাই মাশরেকী বেশ কয়েকটি গান সংযুক্ত করতে পেরে আজ খুবই তৃপ্তি পাচ্ছি। তারই সঙ্গে গর্ববোধ করি।
আলোচনার পরে গুণীদের মধ্যে সংর্বধনা দেয়া হয়। যারা সংবর্ধিত হলেন তারা হচ্ছেন- সাহিত্যে জীবন ইসলাম ও আফরোজা পারভীন, আফতাব আলী, কৃষি বিজ্ঞানে ড. এস এম আফসারুজ্জামান, আইন সেবায় শেখ জাহাঙ্গীর আলম, ক্রীড়ায় আবদুল আজিজ, শিল্প উন্নয়নে শিরিন খুরশিদ জাহান, মঞ্চ অভিনয়ে পাপিয়া সেলিম, সমাজ সেবায় মাহবুব নেওয়াজ চৌধুরী ও আক্তার হোসেন চৌধুরী, চিত্রশিল্পে ফায়জুল কবির, মুক্তিযুদ্ধে ও চিকিৎসায় ডা. নাজিম উদ্দিন আহমেদ।