l বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৯২৭ সালে প্রথম ভর্তি হন স্থানীয় গীমাডাঙ্গা-টুঙ্গিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
l তিনি দশ বছর বয়সেই নিজের গায়ের কাপড় খুলে অন্যকে দান করে দিয়েছিলেন। কারণ, তাঁরই বয়সী এক ছেলের পরণে কোনো জামা-কাপড় ছিল না, সেশীতে কষ্ট পাচ্ছিল। এই হচ্ছে আমাদের বঙ্গবন্ধু।
l বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাক নাম ছিল খোকা। তিনি ছিলেন ভাই-বোনদের মধ্যে তৃতীয়। স্বভাবে ছিলেন একটু জেদি, চঞ্চল ও একগুঁয়ে। এলাকার মানুষ তাঁকে ডাকত ‘মিয়া ভাই’ বলে।
l দোয়েল ও বাবুই পাখি ভীষণ ভালোবাসতেন। বাড়িতে শালিক ও ময়না পুষতেন। বানর ও কুকুর পুষতেন বোনদের নিয়ে। ফুটবল ছিল তাঁর প্রিয় খেলা। গ্রামের মাটি আর মানুষ তাঁকে প্রবলভাবে আর্কষণ করত।
l ছোটবেলায় তাঁর প্রিয় খাবার ছিল—ভাত, মাছের ঝোল আর সবজি। আর খাওয়ার শেষে দুধ-কলা-গুড় না থাকলে তাঁর যেন খাওয়াই পূর্ণ হতো না!
l বিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতেন তিনি। পছন্দ করতেন ইতিহাসের বই।
l চোখে অসুখের কারণে ১৯৩৪ থেকে চার বছর তিনি স্কুলের পাঠ চালিয়ে যেতে পারেননি। সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ১৯৩৭ সালে গোপালগঞ্জ মাথুরানাথ মিশনারি স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। এই স্কুলে থাকাকালীন তাঁর প্রতিভা আর নেতৃত্বের বিকাশ ঘটে।
l শিশুকাল থেকেই শেখ মুজিব ছিলেন পরোপকারী এবং অন্যায়ের প্রতিবাদী। মাত্র তেরো বছর বয়সে প্রতিবাদের এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তিনি। ওই সময় গোপালগঞ্জে স্বদেশী আন্দোলনের এক সমাবেশে জনতার ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ দেখে বিক্ষুব্ধ হন শিশু মুজিব। ফলে বিক্ষোভকারীরা যখন পুলিশের ওপর চড়াও হয়—তখন তিনিও বন্ধুদের নিয়ে যোগ দেন বিক্ষোভকারীদের দলে।
l গোপালগঞ্জ মিশন হাইস্কুল পরিদর্শনে আসেন শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক। তাঁকে সংবর্ধনা জানানোর ব্যাপারে বিরোধ দেখা দেয়। বিষয়টি কিশোর মুজিবের ভালো লাগেনি। তাই তিনি আয়োজকদের একজন সক্রিয় কর্মী হয়ে একটি মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন করেন। এতে বিরোধিতাকারীদের রোষানলে পড়েন তিনি। রাজনৈতিক কারণ দেখিয়ে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। হাজতবাস করতে হয় সাত দিন। এটিই তাঁর জীবনের প্রথম কারাবরণ।
l একবার গোপালগঞ্জে আসেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। শেখ মুজিব তাঁর সামনে স্কুলের ছাত্রাবাসের দুরবস্থার কথা তুলে ধরেন। কিশোর মুজিবের দুরন্ত সাহস আর মনোবল সোহরাওয়ার্দীকে বিশেষভাবে আকর্ষণ করে। তিনি সহজেই আপন করে নেন মুজিবকে।