‘মা, আমি ভাল আছি। আমার জন্য কোনো চিন্তা করবা না। আমি আল্লাহর পথে চলে গেলাম।’ মাদ্রাসায় পড়ালেখা করতে গিয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজের ৫ দিন পর মায়ের ফোনে এসএমএস (খুদে বার্তা) পাঠিয়ে জানিয়ে দিল নেয়ামতুল্লাহ। ছেলে জঙ্গি গোষ্ঠীতে যোগ দেওয়ায় উদ্বিগ্ন তার পরিবারসহ স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম জানান, নেয়ামতুল্লাহ বেপারী (১৬) স্থানীয় বাকাল গ্রামের খোরশেদ বেপারীর ছেলে। সে উপজেলা সদরের আল জামিয়াতুল নাফিজিয়া আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার কওমী বিভাগের ছাত্র। এর আগে সে হাফেজী মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেছে। গত ২৭ নভেম্বর সে বাড়ি থেকে নেয়ামতুল্লাহ মাদ্রাসায় যায়। গত ৩০ নভেম্বর জোহরের নামাজ শেষে মাদ্রাসা থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়। তবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাদের ছাত্র নিখোঁজের ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেয়নি। বাধ্য হয়ে ছেলে নিখোঁজের ঘটনায় খোরশেদ বেপারী গত ৩ ডিসেম্বর আগৈলঝাড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এ ব্যাপারে জানতে নেয়ামতুল্লাহর মাদ্রাসায় গেলে দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি।
খোরশেদ বেপারী জানান, পেশায় তিনি দিনমজুর। তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে নেয়ামতুল্লাহ মেঝ। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে তিনি স্ত্রীর ফোনে নিখোঁজ ছেলের এসএমএস পাঠানোর কথা স্বীকার করেন।
নেয়ামতুল্লাহর মামা শাহাদাত্ হোসেন ফোনে ইত্তেফাককে জানান, নেয়ামতুল্লাহ নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার ব্যবহূত ০১৯৯২৫৭৪৪৭৩ নম্বরে একাধিকবার ফোন দিলেও কেউ রিসিভ করেনি। এক পর্যায়ে গত ৫ ডিসেম্বর তার বোন ও নেয়ামতুল্লাহর মা কোহিনূর বেগমের ফোনে একটি এসএমএস আসে। তাতে লেখা রয়েছে- ‘মা, আমি ভাল আছি। আমার জন্য কোন চিন্তা করবা না। আমি আল্লার পথে চলে গেলাম।’
এসএমএসের কথা স্বীকার করে নিখোঁজ ছাত্রের মা কোহিনূর বেগম জানান, ‘তার ছেলে খারাপ ছিল না। তবে মাদ্রাসায় পড়ালেখা করার সময় তার আচরণে অসঙ্গতি ধরা পড়ে।’ কোহিনূর বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বরিশাল র্যাব-৮ কার্যালয়ে ডেকে নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরো বলেন, নিখোঁজের জিডি দায়েরের পর থেকেই আইনি তত্পরতা অব্যাহত রয়েছে। মসজিদগুলোতে ওই ছাত্রের যাতায়াত ও বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে পুলিশ জানার চেষ্টা করছে।