‘ব্লু হোয়েল গেম’ যেন আতঙ্ক সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য একসঙ্গে কাজ শুরু করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। গতকাল মঙ্গলবার বিটিআরসি একটি শর্ট কোড খুলেছে। বিপজ্জনক কোনো গোইমের লিংক দেখলেই ২৮৭২ নম্বরে ফোন করার অনুরোধ জানিয়েছে। তবে বিটিআরসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ব্লু হোয়েলের এখনো কোন লিংকের সন্ধান তারা খুঁজে পাননি।
বিটিআরসির একজন কর্মকর্তা বলেন, সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ব্লু হোয়েল গেমের ব্যাপারে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হলো এই ধরনের কোনো লিংকই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও এমন কোনো লিংকের সন্ধান দিতে পারেনি। বাংলাদেশে এই লিংকের কোনো কার্যক্রম আছে কি-না তাও নিশ্চিত নন তারা। তবে এই ধরনের কোনো লিংকের সন্ধান কেউ দিলে সঙ্গে সঙ্গে সেটা বন্ধ করে দেওয়া হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কোনো অভিভাবক যদি মনে করেন, তার সন্তান এই ধরনের লিংক ব্যবহার করছেন তাহলে অবশ্যই যেন ২৮৭২ নম্বরে ফোন করে বিটিআরসিকে বিষয়টি অবহিত করেন।
বিটিআরসির সচিব সরওয়ার আলম ইত্তেফাককে বলেন, সরকারের নির্দেশনা আমরা পেয়েছি। এ ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা হচ্ছে।
সোমবার মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে (শাহজাহান মাহমুদ) নির্দেশনা দিয়েছি, বিষয়টি তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। ওই ছাত্রী আলোচিত এই গেম খেলে আত্মহত্যায় প্ররোচিত হয়েছিল কি না এবং বাংলাদেশে থেকে এই গেম খেলা হচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে বিটিআরসিকে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বাংলাদেশে ব্লু হোয়েল গেম লিংক বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং এর উপর সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। আমরা সব সময় খেয়াল করছি কতগুলো লিংক থেকে এগুলো করা হচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিটিআরসির সঙ্গে কথা বলে সেগুলো ব্লক করার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি আমাদের আইসিটি ডিভিশনের যে বিডিসিআইআরটি আছে তারাও সতর্ক নজর রাখছে।’
২০১৩ সালে রাশিয়ায় ‘এফ ৫৭’ নামে যাত্রা শুরু করে গেমটি। নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত ফিলিপ বুদেইকিন নামে এক সাবেক মনোবিদ্যা শিক্ষার্থী এই গেম তৈরি করেন। তার দাবি, এর উদ্দেশ্য হচ্ছে সমাজে যাদের কোনো মূল্য নেই বলে তিনি বিবেচনা করেন তাদেরকে আত্মহত্যার দিকে প্ররোচিত করার মাধ্যমে সমাজকে ‘পরিষ্কার’ করা। এই গেম খেলে ১৬ জন কিশোরী আত্মহত্যার পর বুদেইকিনকে রাশিয়ায় আটক করা হয়।