মেহেরপুর জেলা ও উপজেলাগুলোতে এক টাকা, দুই টাকা ও পাঁচ টাকার কয়েন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ। সরকারি কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও কয়েন নিতে আপত্তি জানাচ্ছেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। মানুষ কয়েন নিয়ে পড়েছেন মহাবিপাকে। মুদি দোকান, ফেরিওয়ালা, মিষ্টির দোকান, যাতায়াতের ভাড়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কয়েন নিয়ে শুরু হয়েছে ভোগান্তি। এক টাকা, দুই টাকা কয়েন বা নোট এতদিন সরকারি মুদ্রা হিসেবে প্রচলিত ছিল। কিন্তু দুই টাকার ক্রয়ক্ষমতা আগের চেয়ে হ্রাস পাওয়ায় সরকার পাঁচ টাকার মুদ্রাকে সরকারি মুদ্রা ঘোষণা করতে যাচ্ছে।
মুদি দোকানিরা জানান, ধাতব মুদ্রা বা কয়েন নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় রয়েছেন তাদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, অনেক পণ্য রয়েছে যেগুলো বিক্রি করতে হলে এক থেকে পাঁচ টাকার কয়েন ছাড়া বেচাকেনা করা সম্ভব নয়। কিন্তু মহাজন ও ব্যাংক তা নিতে নারাজ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেসরকারি এক ব্যাংকের দু’জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, গেল ঈদে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিটি ব্যাংককে নতুন নোটের পাশাপাশি অনেকটা বাধ্যতামূলক ধাতব মুদ্রা বা কয়েন দেয় যার পরিমাণ কমপক্ষে দুই লাখ টাকা। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক কখনও এমনটি করেনি। বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েনগুলো বাতিল ঘোষণা না করলেও মানুষ এগুলো আর নিতে চাচ্ছেন না। প্রায় সবখানেই এই কয়েনগুলো আদান-প্রদান নিয়ে প্রকট সমস্যা চলছে। হাট-বাজারসহ ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কয়েন দেখলেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে লেগে যায় বাক-বিতণ্ডা। কোনো পক্ষই এসব ধাতব মুদ্রা নিতে রাজি নয়। এমনকি ব্যাংকগুলো গ্রাহককে এসব ধাতব মুদ্রা সরবরাহ করলেও সিংহভাগ ব্যাংকই সেই মুদ্রা বা কয়েন গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। অবস্থা দেখে মনে হয়, আইনত সচল হলেও বাস্তবে কয়েনগুলো যেন অচল।
উল্লেখ্য, ছেঁড়া, ফাটা ও ময়লাযুক্ত নোটের বিনিময়মূল্য প্রদান এবং ধাতব মুদ্রা গ্রহণ ও বিতরণ না করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে সর্তক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে জারি করা সার্কুলারে এ সতর্কতা জানানো হয়। এক টাকা, দুই টাকা ও পাঁচ টাকার কয়েন নিয়ে বিপাকে পড়া এই অঞ্চলের মানুষেরা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।