
বিআইডিএস-এর গবেষণা
g ইত্তেফাক রিপোর্ট
গত একদশকে উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলো গড়ে ৪ দশমিক ৭ ভাগ হারে মোট দেশজ উত্পাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এসময়ে বাংলাদেশ গড়ে ৬ শতাংশের উপরে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। প্রবৃদ্ধি সারাবিশ্বেই দারিদ্র্য হার কমাতে সাহায্য করেছে; কিন্তু এর পরেও প্রবৃদ্ধি সকলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে পারছে না। এর মূল কারণ হলো, সম্পদের অভাব, ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা এবং পক্ষপাতমূলক নীতি। বাংলাদেশ উচ্চ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করলেও এখনো প্রতি চার জনের একজন দারিদ্র্যের ঊর্ধ্ব সীমার নিচে রয়েছে। প্রতি আট জনের একজন দারিদ্র্যের নিম্নসীমার নিচে রয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) এর বার্ষিক গবেষণা বিস্তরণ অনুষ্ঠানে এমটি উল্লেখ করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বিআইডিএস রিসার্চ এলামনাস-২০১৮’ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির মান: কিছু নতুন প্রমাণ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনটি যৌথ ভাবে তৈরি করেছেন ড. কাজী ইকবাল ও নাহিদ ফেরদৌস পবন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, অসমতা বা বৈষম্য প্রবৃদ্ধির গতিকে বাধাগ্রস্ত করে। বাংলাদেশে আগের চেয়ে বেশি হারে কর্মসংস্থান হচ্ছে; কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় এই হার কম। প্রতিবছর গড়ে ১৩ লাখ কর্মসংস্থান হচ্ছে দেশে, এর পরিমাণ কমপক্ষে ১৬ লাখে উন্নীত করতে হবে।
দুই দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানে গতকাল সকালে উদ্বোধনী পর্বে বিআইডিএস এর মহাপরিচালক কে. এ. এস মুর্শিদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। প্রথম দিনে গতকাল মোট দশটি গবেষণা পত্র উপস্থাপন ও এর বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট ও শিক্ষা বিষয়ক অপর এক গবেষণা পত্রে গবেষক শহিদুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট বা জনসংখ্যার বোনাস যুগে যদি কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগানো না যায় সেক্ষেত্রে ‘মধ্য আয়ের ফাঁদ’ থেকে উত্তোরণ সম্ভব নয়। এজন্য পর্যাপ্ত শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের জনসংখ্যার সবচেয়ে বড় অংশ এখন কর্মক্ষম। তাদের উপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে।
এসএমই খাতে ঋণ বিষয়ে করা এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, ক্ষুদ্র খাতে ঋণ কর্মসূচি উত্পাদনশীলতা বাড়াতে বড় ভূমিকা রাখে। উপজেলা পর্যায়ে এক শতাংশ হারে ব্যাংকিং সুবিধা বাড়ালে প্রতিষ্ঠান ও শ্রমের উত্পাদনশীলতা ২ থেকে ৩ গুণ বৃদ্ধি পায়। সেইসাথে ঋণ প্রাপ্যতা সহজ করা হলে প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এসএমই খাতে নারী উদ্যোক্তা: বাংলাদেশ প্রক্ষাপট শীর্ষক প্রতিবেদেনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিভাগীয় পর্যায়ে নারীবান্ধব বাজার ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করতে হবে। নারীদের উদ্যোক্তা হয়ে গড়ে উঠার জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ছাড়াও নীতিগুলো সংস্কার করতে হবে। সম্ভাবনাময় খাতগুলো খুঁজে বের করে সেখানে অধিক হারে নারীদের সম্পৃক্ত করতে হবে। ঋণ প্রাপ্তির সুযোগ বাড়াতে হবে। তবে আশার কথা হলো, এসএমই খাতে আগের চেয়ে অনেক শিক্ষিত নারী এগিয়ে আসছে। ২৭ ভাগ এসএমই নারী উদ্যোক্তা স্নাতক সম্পন্ন করে আসছে। উচ্চ মাধ্যমিকের নিচে রয়েছে ২৪ ভাগ নারী উদ্যোক্তা। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নারী এখন নিজ উদ্যোগে কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারছে। নারীদের জন্য পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধা তৈরিসহ পর্যাপ্ত নীতি সহায়তা দেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদেনে।
ফজর | ৪:৫৩ |
যোহর | ১১:৪৩ |
আসর | ৩:৩৯ |
মাগরিব | ৫:১৭ |
এশা | ৬:৩২ |
পড়ুন |