কাতালান সংকট
আঞ্চলিক পার্লামেন্টে ভাষণ দেওয়ার আগে স্পেন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরিকল্পনা ঝেড়ে ফেলতে কাতালান প্রেসিডেন্ট কার্লেস পুজদেমনের ওপর চাপ বাড়ছে। মঙ্গলবারের ভাষণে তিনি এ মাসের শুরুতে হওয়া গণভোটের সূত্র ধরে একতরফাভাবে কাতালোনিয়া স্বাধীন ঘোষণা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমনটা হলে ইউরোপের অন্য দেশগুলোর সমর্থন মিলবে না বলে জানিয়েছে বিবিসি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রভাবশালী সদস্য ফ্রান্স ও জার্মানি এরই মধ্যে অখণ্ড স্পেনের পক্ষে তাদের অবস্থানের কথা জানান দিয়েছে। কাতালোনিয়ার ভেতরেও স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে দোদুল্যমান পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বার্সেলোনার মেয়র আদা কোলু স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট পুজদেমনকে পার্লামেন্টের ভাষণে স্বাধীনতার ঘোষণা না দিতে আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি কাতালোনিয়ায় মাদ্রিদের সরাসরি শাসন চালুর চিন্তা প্রত্যাহারে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী মারিয়ানো রাখয়ের প্রতিও দাবি জানিয়েছেন। দুই নেতাকে কাতালান সংকট নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়ারও অনুরোধ জানান কোলু। “আলোচনা ও মধ্যস্থতার সম্ভাবনা সংকুচিত হয়ে যায় এমন কোনো সিদ্ধান্ত যেন তারা না নেন সেজন্য অনুরোধ করছি। এটাই হবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে সাহসী পদক্ষেপ,” বলেন মেয়র। স্পেনের বিরোধীদল সোশালিস্ট পার্টির নেতারাও কাতালোনিয়ার স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। দলটির নেতা পেদ্রো সানচেজ জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তিত তিনি। বার্সেলোনায় সংবাদ সম্মেলনে করা মন্তব্যে পেদ্রো বলেন, কাতালান আঞ্চলিক সরকার স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে তার দল স্পেনিশ সরকারের পক্ষ নেবে। “একতরফাভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করা হলে তা সামাজিক ঐক্য নষ্ট করবে এবং এই ধরনের যে কোনো সম্ভাবনায় আমরা মাদ্রিদ সরকারের পক্ষ নেবো।”
স্বাধীনতার পক্ষে-বিপক্ষে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিশাল বিশাল সমাবেশ দেখছে বার্সেলোনা। রবিবার এক সমাবেশে অখণ্ড স্পেনের প্রায় সাড়ে তিন লাখ সমর্থক কাতালোনিয়ার বিচ্ছিন্নতার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান জানিয়েছেন। স্বাধীনতা ঘোষণা করলে স্পেনের পার্লামেন্ট সংবিধানের ১৫৫ অনুচ্ছেদ জারি করে কাতালোনিয়ার স্বায়ত্তশাসনে হস্তক্ষেপ করারও হুমকি দিয়েছে। বিবিসি বলছে, বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাদের সদরদপ্তর ও নিবন্ধিত কার্যালয় সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় অর্থনৈতিকভাবেও চাপে পড়তে পারে কাতালোনিয়া। নির্মাণ প্রতিষ্ঠান আবেরতিস, সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ইনমোবিলিয়ারি কলোনিয়াল ও টেলিকম কোম্পানি সেলনেক্সসহ অনেকেই তাদের প্রতিষ্ঠান কাতালোনিয়া থেকে সরিয়ে মাদ্রিদে নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।